নিজস্ব প্রতিনিধি আগরতলা।
নেতাজির জন্ম জয়ন্তির পরপরই ক্যালেন্ডারের যে দিনটাকে ঘিরে দেশাত্মবোধক আবেগ জাগ্রত হয় প্রত্যেক ভারতীয়র মনে সেটি হল ২৬ শে জানুয়ারি। দিনটি ভারতে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ইংরেজ শাসনের থেকে স্বাধীনতা পায় ভারত। কিন্তু সে সময় ভারতের নিজস্ব কোন স্থায়ী সংবিধান না থাকায় ব্রিটিশ সরকারের ১৯৩৫ সালের গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া এক্ট এর সংশোধিত সংস্করণ অনুযায়ী স্বাধীন ভারত শাসন হতো। ক্রমশই ভারতের নিজস্ব সংবিধানের প্রয়োজন দেখা দিতে শুরু করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে সংবিধান সভার ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন করা হয় সংবিধান সভার সদস্যদের। ডঃ বি আর আম্বেদকর, জহরলাল নেহেরু, ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদ, সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেল, মৌলানা আবুল কালাম আজাদদের মত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে সংবিধান সভা তৈরি করা হয়। ১৯৪৭ সালের ২৯ আগস্ট আম্বেদকর এর নেতৃত্বে ভারতের স্থায়ী সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে একটি খসড়া কমিটি গড়ে তোলা হয়। এরপর এই খসড়ার উপর দীর্ঘ প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে জনগণের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা ও নানা চিন্তা ভাবনার পরে প্রস্তাবিত সংবিধানে কিছু সংশোধন, সংযোজন ও পরিবর্তন আনা হয়। এরপরেই ১৯৪৯ সালের ২৬ শে নভেম্বর সংবিধানসভায় শেষ পর্যন্ত ভারতীয় সংবিধানের খসড়া গৃহীত হয়। ১৯৫০ সালের ২৪ শে জানুয়ারি সংবিধানের দুটি হস্তলিখিত কপিতে সই করেন সংবিধান সভার ৩০৮ জন সদস্য। এর দুইদিন পর ২৬ শে জানুয়ারি ভারতীয় সংবিধান কার্যকর হয়। আর এতেই আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভারত। স্বাধীনতার প্রায় আড়াই বছর পর তৈরি হলো দেশের সংবিধান। যা ১৯৫০ সালে ২৬শে জানুয়ারি কার্যকর করা হলো। তাই প্রতিবছর এই দিনটিতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান, কুচকাওয়াজের মাধ্যমে দেশের সংস্কৃতি, ইতিহাসের ছবি ভেসে আসে। নয়া দিল্লি থেকে ত্রিপুরা, প্রজাতন্ত্র দিবসকে ঘিরে সেজে উঠে দেশের সকল প্রান্ত। এদিন বর্ণময় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই দেশবাসী উদযাপন করেন প্রজাতন্ত্র দিবসটি। সরকারিভাবে রাজ্যে কেন্দ্রীয় মূল অনুষ্ঠানটি হয় আগরতলা আসাম রাইফেলস ময়দানে। সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে আরক্ষা কর্মীদের অভিবাদন গ্রহণ করে থাকেন রাজ্যপাল। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। গত কয়েকদিন ধরে আসাম রাইফেলস ময়দানে চলছে, জোরদার প্রস্তুতি। যে প্রস্তুতির চূড়ান্ত রূপ পেল মঙ্গলবার। এদিন মূল অনুষ্ঠানটিকে সামনে রেখে শেষ মহড়া সেরে নিলেন আরক্ষা প্রশাসনের কর্মীরা। এতে অংশ নেন ত্রিপুরা পুলিশ, হোমগার্ড, টিএসআর,সিআরপিএফ, বিএসএফ সহ বিভিন্ন বাহিনীর কর্মীরা।